শীর্ষ 5 টেস্ট ইতিহাসে উইকেটকিপারদের সর্বোচ্চ ইনিংস: কিংবদন্তি ব্যাটসম্যানের অবিশ্বাস্য রেকর্ড

টেস্ট ক্রিকেটে উইকেটকিপারদের প্রধান কাজ হলো বোলারদের সহায়তা করা এবং পিছন থেকে দলকে নেতৃত্ব দেওয়া। কিন্তু ইতিহাসে কিছু উইকেটকিপার এমন ব্যাটিং করেছেন, যা ক্রিকেটপ্রেমীদের চিরস্মরণীয় হয়ে আছে। এই নিবন্ধে আমরা তুলে ধরছি টেস্ট ইতিহাসে উইকেটকিপারদের সর্বোচ্চ ইনিংস, যেখানে ব্যাট হাতে এই তারকারা দেখিয়েছেন ধৈর্য, শৈল্পিকতা ও শক্তির অনন্য মেলবন্ধন।

শীর্ষ 5 টেস্ট ইতিহাসে উইকেটকিপারদের সর্বোচ্চ ইনিংসর তালিকা

৫. তসলিম আরিফ – ২১০* বনাম অস্ট্রেলিয়া (১৯৮০)

টেস্ট ইতিহাসে উইকেটকিপারদের সর্বোচ্চ ইনিংস

তসলিম আরিফের নাম আজও পাকিস্তানের ক্রিকেট ইতিহাসে গর্বের সঙ্গে উচ্চারিত হয়। ১৯৮০ সালে করাচিতে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিনি খেলেন অপরাজিত ২১০ রানের অনবদ্য ইনিংস, যা তাকে টেস্ট ইতিহাসে উইকেটকিপারদের সর্বোচ্চ ইনিংস তালিকায় স্থায়ী স্থান দেয়। তিনি ৩৭৯ বল খেলে ২০টি চার মেরেছিলেন এবং প্রতিটি শটেই ফুটে উঠেছিল তার পরিপক্কতা ও মনোযোগ। সংযম, কৌশল ও স্থিরতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে তসলিম আরিফ প্রমাণ করেছিলেন, ব্যাট হাতে উইকেটকিপাররাও ম্যাচের গতি নির্ধারণ করতে পারে।

পরিসংখ্যানমান
রান২১০*
বল খেলা৩৭৯
চার২০
ছয়
প্রতিপক্ষঅস্ট্রেলিয়া

৪. মুশফিকুর রহিম – ২১৯* বনাম জিম্বাবুয়ে (২০১৮)

টেস্ট ইতিহাসে উইকেটকিপারদের সর্বোচ্চ ইনিংস

বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে মুশফিকুর রহিমের অবদান অমূল্য, কিন্তু তার মিরপুরে ২০১৮ সালের ২১৯ অপরাজিত ইনিংস ছিল এক অনন্য মাইলফলক। টেস্ট ইতিহাসে উইকেটকিপারদের সর্বোচ্চ ইনিংস তালিকায় এই ইনিংস স্থান পেয়েছে কারণ এটি ছিল ধৈর্য, মনোযোগ ও আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। মুশফিক ৪২১ বল খেলে ১৮টি চার ও ১টি ছয় মারেন, এবং একা হাতে দলকে শক্ত ভিত উপহার দেন। এই ইনিংস প্রমাণ করে যে, নেতৃত্ব ও দায়িত্ববোধ মিলেই একজন প্রকৃত ম্যাচ উইনার তৈরি করে।

পরিসংখ্যানমান
রান২১৯*
বল খেলা৪২১
চার১৮
ছয়
প্রতিপক্ষজিম্বাবুয়ে

৩. এম. এস. ধোনি – ২২৪ বনাম অস্ট্রেলিয়া (২০১৩)

টেস্ট ইতিহাসে উইকেটকিপারদের সর্বোচ্চ ইনিংস

ভারতের ক্যাপ্টেন কুল এম. এস. ধোনির ২০১৩ সালে চেন্নাই টেস্টে খেলা ২২৪ রানের ইনিংসটি এখনো টেস্ট ইতিহাসে উইকেটকিপারদের সর্বোচ্চ ইনিংস হিসেবে অন্যতম। ধোনি তার স্বভাবসুলভ আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ে অস্ট্রেলিয়ার শক্তিশালী বোলিং লাইনকে ভেঙে দেন। ২৬৫ বল খেলে ২৪টি চার ও ৬টি ছয় মারেন তিনি, যা দর্শকদের মুগ্ধ করে। এই ইনিংস শুধু ভারতের লিড বাড়ায়নি, বরং ধোনিকে বিশ্ব ক্রিকেটে এক অনন্য ব্যাটিং নেতার পরিচয় দিয়েছিল। ধোনির এই ইনিংস সাহস ও কৌশলের প্রতীক হিসেবে স্মরণীয়।

পরিসংখ্যানমান
রান২২৪
বল খেলা২৬৫
চার২৪
ছয়
প্রতিপক্ষঅস্ট্রেলিয়া

২. কুমার সাঙ্গাকারা – ২৩0 বনাম পাকিস্তান (২০০২)

টেস্ট ইতিহাসে উইকেটকিপারদের সর্বোচ্চ ইনিংস

শ্রীলঙ্কার কিংবদন্তি কুমার সাঙ্গাকারা ছিলেন ব্যাট হাতে এক অনন্য শিল্পী। লাহোরে পাকিস্তানের বিপক্ষে তার ২৩0 রানের ইনিংস টেস্ট ইতিহাসে উইকেটকিপারদের সর্বোচ্চ ইনিংস তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। ৩২৭ বল খেলে তিনি ৩৩টি চার ও ৩টি ছয় মারেন, প্রতিটি শটে ফুটে উঠেছিল নিখুঁত টেকনিক ও আত্মবিশ্বাস। এই ইনিংস শুধু শ্রীলঙ্কাকে শক্ত অবস্থানে নিয়ে যায়নি, বরং সাঙ্গাকারাকে প্রমাণ করেছিল টেস্ট ক্রিকেটের সবচেয়ে ধারাবাহিক ও ক্লাসিক ব্যাটসম্যানদের একজন হিসেবে।

পরিসংখ্যানমান
রান২৩0
বল খেলা৩২৭
চার৩৩
ছয়
প্রতিপক্ষপাকিস্তান

১. অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার – ২৩২* বনাম ভারত (২০০০)

টেস্ট ইতিহাসে উইকেটকিপারদের সর্বোচ্চ ইনিংস

জিম্বাবুয়ের অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার টেস্ট ইতিহাসে উইকেটকিপারদের সর্বোচ্চ ইনিংসের শীর্ষে রয়েছেন। ২০০০ সালে নাগপুরে ভারতের বিপক্ষে তিনি খেলেন অপরাজিত ২৩২ রানের ইনিংস, যা ক্রিকেটের ইতিহাসে এক অনন্য অধ্যায়। ৪৪৪ বল খেলে তিনি ৩০টি চার ও ২টি ছয় মারেন, প্রায় নয় ঘণ্টা ব্যাট করে জিম্বাবুয়েকে উদ্ধার করেন বিপদ থেকে। এই ইনিংস শুধু তার ক্লাস ও মনোযোগের পরিচয় নয়, বরং দেখিয়েছিল উইকেটকিপাররাও কিভাবে দলের ভরসা হতে পারে। টেস্ট ইতিহাসে উইকেটকিপারদের সর্বোচ্চ ইনিংস হিসেবে এটি চিরস্মরণীয়।

পরিসংখ্যানমান
রান২৩২*
বল খেলা৪৪৪
চার৩০
ছয়
প্রতিপক্ষভারত

READ MORE:

FAQ

টেস্ট ইতিহাসে উইকেটকিপারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ইনিংস কার?

অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার, যিনি ভারতের বিপক্ষে ২৩২* রান করেছিলেন ২০০০ সালে।

বাংলাদেশের পক্ষে সর্বোচ্চ টেস্ট ইনিংস কোন উইকেটকিপারের?

মুশফিকুর রহিমের ২১৯* রান, যা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আসে।

ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ স্কোর করা উইকেটকিপার কে?

এম. এস. ধোনি, যিনি ২২৪ রান করেন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে।

কুমার সাঙ্গাকারা কি সব ইনিংসে উইকেটকিপিং করতেন?

না, কিন্তু এই ইনিংসের সময় তিনি উইকেটকিপারের দায়িত্ব পালন করছিলেন।

উইকেটকিপারদের মধ্যে সবচেয়ে দ্রুত ডাবল সেঞ্চুরি কে করেছেন?

এম. এস. ধোনি, যিনি মাত্র ২৬৫ বলে ডাবল সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন।

Scroll to Top